বরগুনা প্রতিনিধি ॥ বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বাওয়ালকার গ্রামে ইটভাটা নিয়ন্ত্রন আইনের সকল বিধি অমান্য করে এসটিএফ-২ ইটভাটায় দেদারছে ইট পুড়িয়ে পরিবেশ দূষণ করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ভাটার কারণে নষ্ট হচ্ছে গ্রামীন রাস্তা, ধ্বংস হচ্ছে জমির ফসল, প্রতিনিয়ত দূষণ হচ্ছে পরিবেশ। ভাটার গভীর কালো ধুয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায় ভাঁটা স্থাপিত আশপাশের এলাকা। পরিবেশ অীধদপ্তরের ছাড়পত্র থাকলেও ভাটার মালিক সুলতান হাওলাদার মানছেননা ভাঁটা স্থাপনের শর্তসমূহ। স্থানীয়দের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করেই চলছে সবকিছু। এ ব্যাপারে সচেতন নাগরিকদের অভিযোগ থাকলেও এর কোন প্রতিকার হয়নি। বন বিভাগের ২ কিঃ মিঃ আর বসতভিটা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছে দুই ফসলি জমিতে ও পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোন স্থানে ইটভাটা স্থাপন করা যাবেনা। এসকল বিধি নিষেধ থাকলেও অর্ধ কিলোমিটার দুরত্বে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকা সত্বেও কোন্ ক্ষমতাবলে এসটিএফ ইটভাটার স্বত্বাধিকারী সুলতান হাওলাদার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পেলেন এ প্রশ্ন এলাকাবাসীর। সরেজমিনে দেখা যায়, বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বাওয়ালকার গ্রামে এলজিইডির রাস্তার পার্শ্বেই স্থাপন করা হয়েছে এসটিএফ ইটভাটা। এ ভাটার অতি নিকটেই রয়েছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ বাওয়ালকার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুই ফসলী জমি এবং বসবাসকারী অনেকগুলো পরিবার। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত সড়কে প্রতিদিন ভাটায় তৈরী ইট এবং মাটি বোঝাই ভারী টাফি, ট্রাক চলাচলে অল্পদিনেই রাস্তা খানা-খন্দে পরিনত হয়। বর্ষা মৌসূমে ইট তৈরীর মাটিতে এ রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে থাকে এতে সাধারণ মানুষের ও স্কুলগামী ছোট ছোট শিশুদের চলাচলে অনেক দূর্ভোগ পোহাতে হয়। এ ছাড়া শুকনো মৌসূমে টাফি ও ট্রলি চলাচলে পুরো এলাকা ধুলোয় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এর ফলে বসবাসকারী পার্শ্ববর্তী অনেক পরিবারে দেখা দিয়েছে শ্বাসকষ্ট। তারা আরও বলেন, ভাটার কারণে পার্শ্ববর্তী আমাদের ফসলী জমির কোন ফসল ফলাতে পারছিনা। ফসলের গাছ রোপন করলে তা অল্প দিনেই মরে যায়। ফলের গাছে ফল ধরলেও তা ঝরে যায় এবং গাছ হলুদ বর্ণ ধারন করে আস্তে আস্তে মরে যায়। বিএডিসির তত্বাবধানে খালের সাথে খড়া মৌসূমে ফসল ক্ষেতে পানি তোলার জন্য একটি পাকা ড্রেন করে দেয়া হয়েছিলো। ভাঁটা মালিক সুলতান তার ভেকু দিয়ে ইট তৈরীর মাটি কাটার সাথে সেই ড্রেন ভেঙ্গে দিয়েছে। কুমড়াখালী এলাকার মতিউর রহমান বলেন, আমার জমির পাশে সুলতান ভেকু দিয়ে ইট তৈরীর মাটি কেটে গভীর খাঁদ বানিয়েছে। ওই খাঁদে আমার ফসলী জমি ভেঙ্গে পড়েছে। আমি জমিতে ফসল দিতে পারছিনা। তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, এখানে মূল কথা হচ্ছে পরিবেশের আইন অমান্য করে কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ইটভাটা চলে। তানাহলে এখানে ইটের ভাটার জায়গাই নয়। এ ব্যাপারে এসটিএফ ভাঁটা মালিক সুলতান হাওলাদার বলেন, আমার লাইসেন্স আছে এবং সকল নিয়ম কানুন মেনেই ইটভাটা চালাই। বরগুনা এলজিইডির নির্বাহীর প্রকৌশলী এস.কে আরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তার বিষয়ে সদর উপজেলা প্রকৌশলীকে চিঠি পাঠাচ্ছি। বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) মোঃ আশ্রাফুল ইসলাম বলেন, যদি কেউ ইট ভাঁটা আইনের শর্ত ভঙ্গ করে ইট প্রস্তুত করে তবে, তার বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। জানতে চাইলে বরিশাল বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কামরুজ্জামান সরকার বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply